Bangla Waz 2022 (Jahannam er Agun) in BD PDF Text with Mp3
Bangla Waz 2022 (Jahannam er Sasti) in BD Text with Mp3 is a new Bangla waz mahfil available on Text formet. You can read Jahannamer Sasti in Bangla font.
Jahannam-জাহান্নাম |
জাহান্নামের স্তর সাতটি। অন্যায় ও জুলুমের স্তর বিবেচনা করে অপরাধীদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে উপযুক্ত স্থানে।
টেনে নেওয়া হবে মাথার চুল ধরে। পুলসিরাতের ওপর চলতে গিয়ে জাহান্নামিরা একে একে পরতে থাকবে ক্বারার তথা স্বীয় অবস্থানস্থলে। তন্মধ্যে যাদের অন্তরে বিন্দু পরিমাণ ঈমান আছে, নির্দিষ্ট পরিমাণে শাস্তি ভোগ করার পর তারা আসবেন জান্নাতে। আর নাস্তিক, মুরতাদ কিংবা অবিশ্বাসীরা অনন্তকালের জন্যে থেকে যাবে ওখানেই।
আল্লাহতায়ালা আগুনের থাম দিয়ে তাদের বাসস্থানকে এমনভাবে চারদিক থেকে আবদ্ধ করে দেবেন, যেন তিনি তাদের ভুলে গেছেন। কিন্তু অভ্যন্তরে যথারীতি চলতে থাকবে তাদের কৃতকর্মের ফলাফল।
জাহান্নামিদের শাস্তির বর্ণনা দিতে গিয়ে কোরআনে কারিমে বারবার বলা হয়েছে- ‘নার’ তথা আগুন। যে আগুনের তীব্রতা গায়ের চামড়া খসিয়ে দেবে পুরোপুরি, পরক্ষণেই তা আবার পুনরায় পূর্বের রূপে ফিরে যাবে। আবারও আগুন তা খসিয়ে দেবে। তাদের আঘাত করা হবে আগুনের মুগুর দিয়ে।
এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘কখনও না! তারা নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায়। তুমি কি জানো হুতামা কি? (তা তো হলো) আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন। যা অন্তরসমূহকে গ্রাস করে। তা তাদেরকে বেষ্টন করে রাখবে। অতি উঁচু স্তম্ভসমূহে। ’ -সূরা হুমাযাহ: ৪-৯
কোরআনে জাহান্নামের পানি আর ছায়ার বর্ণনাও রয়েছে। তার ধরণ হলো- তারা পানি চাইলে দেওয়া হবে গলিত সীসা আর ছায়া হবে উত্তপ্ত। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তারা থাকবে অতি উষ্ণ বাতাস ও গরম পানিতে। ছায়া হবে উত্তপ্ত। ’ -সূরা ওয়াকিয়া: ৪২-৪৩
কোরআনের বর্ণনায় উঠে এসেছে এমন আরও বহুবিধ শাস্তির কথা। আর এসব বর্ণনার মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা চেয়েছেন প্রিয় বান্দাদের সতর্ক করতে। জাহান্নামের এতসব বর্ণনা থাকলেও কিন্তু কোথাও আসেনি শীতল শাস্তির বর্ণনা। তাই বলে কি শীতল কোনো শাস্তি আখেরাতে হবে না?
এ প্রশ্নের উত্তর জানতে আসুন শুনে নেই কোরআনের একটি আয়াত। ওই আয়াতে আল্লাহতায়ালা জান্নাতিদের নিয়ামতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘তারা সেখানে আস্বাদন করবে না শামস (উত্তপ্ততা) এবং যামহারির (শীতলতা)। ’ -সূরা দাহর: ১৩
কোরআনের কারিমের ব্যাখ্যাকাররা এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন- গরমও নয়, ঠান্ডাও নয়। -তাফসিরে জালালাইন, সফওয়াতুত তাফাসির
আর যামহারির শব্দের অর্থ হলো- প্রচণ্ড ঠান্ডা। -আল মুজাম আল ওয়াসিত, হাশিয়ায়ে বোখারি
তীব্র গরম এবং তীব্র শীত অনুভূত না হওয়াকে জান্নাতিদের নিয়ামত বলা হয়েছে। এর দ্বারা বুঝা যায়, উভয় অনুভূতি জাহান্নামিদের শাস্তি হবে, যা না থাকাটা জান্নাতিদের কাছে নিয়ামত মনে হবে।
এবার আসি হাদিসের দিকে। সহিহ বোখারি ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করলো- আমার এক অংশকে অপর অংশ খেয়ে ফেলছে। তখন রাব্বে কারিম তাকে দু’বার শ্বাস নেওয়া অনুমতি দিলেন। একবার গ্রীষ্মকালে, আরেকবার শীতকালে। তোমরা গরমের যেই প্রচণ্ডতা অনুভব করো- তা জাহান্নামের উত্তপ্ততা থেকে আর শীতের যে তীব্রতা অনুভব করো; তা জাহান্নামের শীতলতা (যামহারির) থেকে। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম
বর্ণিত হাদিস দ্বারা বুঝা যায়- জাহান্নামের শাস্তিসমূহ থেকে শীতলতাও এক ধরণের শাস্তি। কিন্তু জান্নাতের আনন্দদায়ক অনুভূতি যেমন শোনেনি কোনো কান, দেখেনি কোনো চোখ, কল্পনা করেনি কোনো অন্তর, তেমনি জাহান্নামের শাস্তির কণা পরিমাণও দুনিয়াতে আমরা অনুভব করতে পারবো না। বস্তুত জাহান্নামের শাস্তির ভয়াবহতা মানুষের ধারনার বাইরে।
এখন প্রশ্ন হতে পারে, তবে কোরআনের কোথাও কেন শীতল কোনো শাস্তির বর্ণনা আসেনি?
এর উত্তরে আরেকটি আয়াত উল্লেখ করা যায়- ‘অবাধ্যদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্ট বাসস্থান। তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে, তা কতই না নিকৃষ্ট স্থান। সে আস্বাদন করুক- গাসসাক্ব (পুঁজ) এবং হামিম (গরম পানি)-এর স্বাদ এবং একই আকৃতির আরও অনেক। ’ সূরা সোয়াদ: ৫৫-৫৮
আয়াতে ‘একই আকৃতির আরও অনেক’ অংশের ব্যাখ্যায় মুফাসসিররা বলেন, উল্লেখিত আজাবের অনুরূপ অন্যান্য আজাব। যেমন- প্রচণ্ড ঠান্ডা। অতি উষ্ণ বাতাস, জাক্কুম ভক্ষণ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার শাস্তি। -সফওয়াতুত তাফসির
সুতরাং আয়াতে শীতলতার নেতিবাচক কোনো কিছু তো নেই-ই বরং পরোক্ষভাবে এর উল্লেখ রয়েছে।
আল্লামা ইবনুস সুন্নি (রহ.) ‘আমালুল লাইল ওয়াল ইয়াওম’ কিতাবে এক দুর্বল হাদিস উল্লেখ করেছেন। তা এই- সাহাবি হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রচন্ড গরমের দিনে যখন বান্দা বলে- ‘আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত আর কেউ নেই। আজ কি গরম! হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিন। ’ তখন আল্লাহ জাহান্নামকে বলেন, আমার এক বান্দা তোমার উত্তপ্ততা থেকে মুক্তি চেয়েছে। তুমি তোমাকে সাক্ষী রাখছি, আমি তাকে তা থেকে মুক্তি দিলাম। ’ প্রচন্ড শীতের দিনে যখন বান্দা বলে- আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত আর কেউ নেই। আজ কি শীত! হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের যামহারির (শীতলতা) থেকে মুক্তি দিন। আল্লাহ জাহান্নামকে বলেন- আমার এক বান্দা তোমার শীতলতা থেকে মুক্তি চেয়েছে। আমি তোমাকে সাক্ষী রাখছি, আমি তাকে তা থেকে মুক্তি দিলাম।
সাহাবায়ে কেরাম জানতে চাইলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যামহারির কি? তিনি বললেন, একটি ঘর, যাতে কাফেরদের নিক্ষেপ করা হবে। তা দেহের এক অংশকে আরেক অংশ থেকে পৃথক করে ফেলবে। ’
আল্লাহ প্রত্যেক মুসলমানকে জাহান্নামের আগুন ও কষ্টদায়ক শীতলতা ইত্যাদি শাস্তি থেকে মুক্তি দিন। আমিন।
Bangla Waz 2020 (Jahannam-জাহান্নাম) in BD Text with Mp3
জাহান্নাম সম্পর্কে ২৩ হাদীস
——————————–---
১. ✒জাহান্নামের ৭০টি লাগাম থাকবে এবং প্রতিটি লাগামে ৭০ হাজার ফেরেস্তা থাকবে তারা তা টেনে আনবে। (মুসলিম- ইবনে মাসউদ [রা.])
২.✒ দুনিয়ার ব্যবহৃত আগুনের উত্তাপ জাহান্নামের আগুনের উত্তাপের ৭০ ভাগের ১ ভাগ। (বুখারী, মুসলিম- আবু হুরায়রা [রা.])
৩.✒ আগুনের জুতা পরিয়ে শাস্তি দেয়ার ফলে তার মগজ টগবগ করে ফুটতে থাকবে, যা হবে জাহান্নামের সবচেয়ে কম শাস্তি। (বুখারী, মুসলিম- নুমান ইবনে বাশীর [রা.]
৪.✒ জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে কম শাস্তি হবে আবু তালিবের। তার পায়ে দু’খানা আগুনের জুতা পরিয়ে দেয়া হবে, ফলে তার মাথার মগজ ফুটতে থাকবে। (বুখারী- ইবেন আব্বাস [রা.])
৫.✒ দুনিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুনে ঢুকিয়ের বের করা হবে। তাকে বলা হবে, তুমি দুনিয়াতে কখনো সুখ ভোগ করেছিলে? সে বলবে না, আমি কখনো সুখ ভোগ করিনি। (মুসলিম- আনাস [রা.])
৬. ✒জাহান্নামের সবচেয়ে কম ও সহজতর শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তি পৃথিবী পরিমাণ সম্পদ থাকলেও তার বিনিময়ে এ আযাব থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করতো। ( বুখারী, মুসলিম- আনাস [রা.])
৭.✒ জাহান্নামীদের মধ্যে জাহান্নামের আগুন কারো টাখনু, কারো হাটু, কারো কোমর, কারো গর্দান পর্যন্ত পৌঁছবে। ( বুখারী, মুসলিম- সামুরা বিন জুনদুব [রা.])
৮. ✒জাহান্নামের মধ্যে কাফেরের এক একটি দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান, তার গায়ের চামড়া হবে ৩ দিনের সফরের পরিমাণ পুরু। (বুখারী, মুসলিম- আবু হুরায়রা [রা.])
৯.✒ জাহান্নামের আগুনকে ১ হাজার বছর তাপ দিয়ে লাল, ১ হাজার বছর তাপ দিয়ে সাদা আর ১ হাজার বছর তাপ দিয় কালো করা হয়েছে। এখন তা ঘোর কালো অন্ধকার অবস্থায় রয়েছে। (তিরমিজী- আবু হুরায়রা [রা.])
১০. ✒জাহান্নামের মধ্যে কাফেরের গায়ের চামড়া হবে ৪২ হাত মোটা, দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান এবং বসার স্থান হবে মাক্কা-মাদীনার মধ্যবর্তী ব্যবধানের পরিমাণ। (তিরমিজী- আবু হুরায়রা [রা.])
১১.✒ জাহান্নামে কাফেরের জিহবা ১/২ ক্রস পর্যন্ত বের হয়ে হেঁচড়িয়ে চলবে এবং লোকেরা তা মাড়িয়ে চলবে। (আহমাদ- ইবনে ওমার [রা.])
১২. ✒জাহান্নামীদের মুখের কাছে যায়তুন তেলের নিচের তপ্ত গাদ নিয়ে আসা হবে এবং সেটা উত্তাপে তার মুখের চামড়া-গোশত খসে পড়বে। (তিরমিজী- আবু সাঈদ [রা.])
১৩. ✒জাহান্নামে সাউদ নামক পাহাড়ে কাফেরদের ৭০ বছরে তার উপর উঠানো হবে এবং নিক্ষেপ করা হবে। এ অবস্থায় সব সময় উঠানামা চলতে থাকবে। (তিরমিজী- আবু সাইদ [রা.])
১৪.✒ জাহান্নামীদের মাথার উপর ফুটন্ত গরম পানি ঢালা হবে তা তার পেটের মধ্যে প্রবেশ করে পেটের সব কিছু বিগলিত করে পায়ের দিক দিয়ে বেরিয়ে যাবে। এর পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসলে পুনরায় তা আবার ঢালা হবে। (তিরমিজী, আবু সাঈদ [রা.])
১৫. ✒জাহান্নামীদেরকে তাদের রক্ত-পুুঁজ পান করানো হবে। এগুলো মুখের কাছে আনলে তারা তা অপছন্দ করবে- তাদের চেহারা দগ্ধ হয়ে মাথার চামড়া খসে পড়বে। এগুলো যখন বাধ্য হয়ে পান করবে, তখন নাড়িভুড়ি খ- খ- হয়ে মলদ্বার দিয়ে নির্গত হবে। (তিরমিজী- আবু উমামা [রা.])
১৬. ✒জাহান্নাম ৪টি প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। প্রত্যেক প্রাচীর ৪০ বছর দূরত্ব পরিমাণ পুরু বা মোটা। (তিরমিজী- আবু সাঈদ [রা.])
১৭.✒ জাহান্নামীদের এক বালতি ভর্তি পুঁজ যদি দুনিয়াতে ফেলা হতো তাহলে গোটাদুনিয়াবাসীক
ে দুর্গন্ধময় করে দিত। (তিরমিজী- আবু সাঈদ খুদরী [রা.]
১৮.✒ যদি জাক্কুম গাছের একটি ফোটা এই দুনিয়ায় পড়ে, তবে দুনিয়াবাসীর জীবন ধারনের উপকরণসমূহ নষ্ট হয়ে যাবে। সেই জাক্কুমই হবে জাহান্নামীদের খাবার। (তিরমিজী- ইবনে আব্বাস [রা.])
১৯.✒ জাহান্নামীদের মুখ আগুনে তাপে ভাজাপোড়া হয়ে উপরের ঠোট সংকুচিত হয়ে মাথার মধ্যস্থলে এবং নিচের ঠোঁট ঝুলে নাভির সাথে এসে লাগবে। (তিরমিজী- আবু সাঈদ খুদরী [রা.])
২০. ✒জাহান্নামীদের চোখের পানি কাঁদতে কাঁদতে প্রবাহিত হবে। এক সময় অশ্রু শেষ হয়ে চোখ দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকবে। ফলে চোখে এমন ক্ষতের সৃষ্টি হবে যে, যদি তাতে নৌকা চালাতে চাও তবে তাও চলবে। (শরহে সুন্নাহ, আনাস [রা.])
২১. ✒জাহান্নামীরা সরাসরি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলবে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করার জন্য। আল্লাহ বলবেন: হে হতভাগার দল! দূর হও। জাহান্নামে পড়ে থাক। তোমরা আমার সাথে আর কথা বলবে না। এরপর হতাশ হয়ে জাহান্নামীরা বিকটভাবে চিৎকার. হাহুতাশ ও নিজের উপর ধিক্কার দিতে থাকবে। (তিরমিজী- আবু দারদা [রা.])
২২. রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, “আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে ভয় প্রদর্শন করছি”- কথা গুলো উচ্চস্বরে বলতে থাকলেন। (দারেমী, সুনান, ইবনে বশীর [রা.])
২৩.✒ আসমান থেকে কোন গোল পাথর যমীনের দিকে ফেলে দিলে তা একটি রাত শেষ হওয়ার আগেই যমীনে পৌঁছে যাবে। কিন্তু জাহান্নামের কিনার থেকে নিচ দিকে কোন পাথর ছেড়ে দিলে ৪০ বছরেও তা তার তলদেশে পৌঁছতে পারবে না। (তিরমিজী-)
ধন্যবাদ সবাইকে।