একটি ভয়ংকর ভূতের গল্প 2022 লেখার পরের ঘটনা-
আঁকা: ইমাদুর রহমান, বয়স ৭
অমাবস্যার রাত। সমস্ত আকাশ যেন দোয়াতের কালি দিয়ে লেপে দেওয়া হয়েছে। আমি বসে আছি ঘরে। বাইরে লক্ষ্মীপেঁচার হুতুম ভুতুম ডাক।
একটা ভূতের গল্প লিখে মন দিয়ে পড়ছিলাম। গল্পটা ভীষণ ভয়ংকর হয়ে গেছে। খুব ভয় ভয় করছিল আমার।
এমন সময় জানালার ধারে হিস্ হিস্ শব্দ! কে যেন আমাকে সাবধান করে দিচ্ছে। শরীরটা ঝাড়া দিয়ে উঠল।
একটু পর কর্কশ গলায় প্রশ্ন, এত রাতে কী লিখছিস তুই?
প্রশ্নের জবাব দেব কীভাবে, আমার কান দিয়ে শোঁ শোঁ করে বাতাস বেরুচ্ছে। বুক ডিব ডিব করছে।
আবার বলল, হেই, কথা বলছিস না কেন? কী লিখছিস, বল।
শুকনো মুখে বললাম, একটা গল্প লিখেছি, ভূতের গল্প।
ভূতের গল্প? ভূত দেখেছিস?
মাথা নেড়ে বললাম, নাহ্, দেখিনি।
না দেখেই গল্প লিখেছিস? যদি দেখতিস?
সেদিনই লেখার ইতি টানতে হতো আমার।
কেন?
ভারি মুশকিল। তখন না আমার কল্পনাগুলো খালি দেখা ভূতের মধ্যেই হাবুডুবু খেতো, এর বাইরে যাওয়াটা খুব কঠিন হয়ে যেতো না! না-দেখা জিনিসকে আমি আমার মতো করে বানিয়ে লিখতে পারি। এতে ভারি সুবিধে! আচ্ছা, তুমি কে?
আমি ভূত, আমি কি তোর সামনে আসবো এখন?
ভূত! আমার শরীরের ভেতর দিয়ে ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেল। আমি থতমত খেয়ে ফ্যাকাসে মুখে বললাম, না, না, না, ভুল করেও না। কোনোদিন না।
কেন? জানতে চাইল ভূতটি।
কেন আবার, তুমি কি চাও না আমি ভয়ংকর ভূতের গল্প লিখে নামকরা ’ভূত-লেখক’ হই? তুমি কি চাওনা আমি গল্প লিখে দুটো পয়সা কামাই করি? তুমি কখনও আমার সামনে এসো না ভাই, প্লিজ, এক্ষুনি চলে যাও এখান থেকে।
তোদের কারণেই মানুষ আমাদের খুব ভয়ংকর বলে জানে, ভয় পায়। আমরা কি সবাই খারাপ? তোদের মধ্যে যেমন ভালো-মন্দ মানুষ আছে, আমাদের মধ্যেও তেমন ভালো-মন্দ ভূত আছে। আর আমাদের মধ্যে ভালো ভূতের সংখ্যাই বেশি। কই, তোরা ক‘জন ভালো ভূতের কথা লিখেছিস?
তোরাই মানবসমাজে আমাদের অসভ্য আর ভয়ংকর করে তুলে ধরেছিস। তোরাই আমাদেরকে মানুষের শত্রু বানিয়ে রেখেছিস। অথচ আমরাও চাই মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে চলতে। তোদের জন্য পারি না। এতে তোদের ওপর আমরা কতটা নাখোস তা অচিরেই টের পাবি।
একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বললাম, হুঁহ্, আমরা হলাম গিয়ে লেখক। আমরাই তোদেরকে এ জগৎ সংসারে ভয়ংকর করে তুলেছি। তোদের নাম শুনলে ধনী-গরিব, শিশু-বুড়ো, রাজা-প্রজা, দুর্বল-পালোয়ান সকলেই ভয়ে অস্থির হয়ে যায়, এটা বুঝি জুত লাগছে না? বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোদের এমন দুর্বল বানিয়ে গল্প লিখে বাজারে ছেড়ে দেবো যে, যেখানে যাবি সেখানেই খাবি মাইর। মারতে মারতে তোদের ছাতু করে ফেলবে। তারপর বুঝবি লেখক কী জিনিস।
আর তুই এখন দেখ, ভূত কী জিনিস! একথা বলেই সে আমার মুখ বরাবর জোরে ফুঁ দিল। গরম ফুঁ। আমার চোখ দুটো প্রায় বন্ধ হয়ে গেল। ফুঁ দিয়ে ভূতটি বলল, তোর ঠিক পেছন দিক থেকে একটা লেজ গজাবে। তখন দুষ্টু শিশুরা তোর লেজ দেখেই ঠিক করবে, তুই গরু, গাধা না বান্দর। তখন বুঝবি ভূতের গল্প লেখার আসল মজা! কথাটা মনে রাখবি, বলেই সে লাটিমের মতো ঘুরতে ঘুরতে উধাও হয়ে গেল।
ক’দিন যাবত আমার শরীরটা মোটেও ভাল যাচ্ছে না। আমার পেছন দিকটায় টনটন ব্যথা করছে। হাত দিয়ে দেখি গোল আলুর মতো কী একটা ঠেলে উপরের দিকে উঠছে। একশ তিন ডিগ্রি জ্বর। এটা যে কিসের আলামত আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।
Voyanok Bangla Bhooter Golpo in 2022 (ভয়ংকর ভুতের গল্প বাংলা)
আঁকা: ইমাদুর রহমান, বয়স ৭
অমাবস্যার রাত। সমস্ত আকাশ যেন দোয়াতের কালি দিয়ে লেপে দেওয়া হয়েছে। আমি বসে আছি ঘরে। বাইরে লক্ষ্মীপেঁচার হুতুম ভুতুম ডাক।
একটা ভূতের গল্প লিখে মন দিয়ে পড়ছিলাম। গল্পটা ভীষণ ভয়ংকর হয়ে গেছে। খুব ভয় ভয় করছিল আমার।
এমন সময় জানালার ধারে হিস্ হিস্ শব্দ! কে যেন আমাকে সাবধান করে দিচ্ছে। শরীরটা ঝাড়া দিয়ে উঠল।
একটু পর কর্কশ গলায় প্রশ্ন, এত রাতে কী লিখছিস তুই?
প্রশ্নের জবাব দেব কীভাবে, আমার কান দিয়ে শোঁ শোঁ করে বাতাস বেরুচ্ছে। বুক ডিব ডিব করছে।
আবার বলল, হেই, কথা বলছিস না কেন? কী লিখছিস, বল।
শুকনো মুখে বললাম, একটা গল্প লিখেছি, ভূতের গল্প।
ভূতের গল্প? ভূত দেখেছিস?
মাথা নেড়ে বললাম, নাহ্, দেখিনি।
না দেখেই গল্প লিখেছিস? যদি দেখতিস?
সেদিনই লেখার ইতি টানতে হতো আমার।
কেন?
ভারি মুশকিল। তখন না আমার কল্পনাগুলো খালি দেখা ভূতের মধ্যেই হাবুডুবু খেতো, এর বাইরে যাওয়াটা খুব কঠিন হয়ে যেতো না! না-দেখা জিনিসকে আমি আমার মতো করে বানিয়ে লিখতে পারি। এতে ভারি সুবিধে! আচ্ছা, তুমি কে?
আমি ভূত, আমি কি তোর সামনে আসবো এখন?
ভূত! আমার শরীরের ভেতর দিয়ে ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেল। আমি থতমত খেয়ে ফ্যাকাসে মুখে বললাম, না, না, না, ভুল করেও না। কোনোদিন না।
কেন? জানতে চাইল ভূতটি।
কেন আবার, তুমি কি চাও না আমি ভয়ংকর ভূতের গল্প লিখে নামকরা ’ভূত-লেখক’ হই? তুমি কি চাওনা আমি গল্প লিখে দুটো পয়সা কামাই করি? তুমি কখনও আমার সামনে এসো না ভাই, প্লিজ, এক্ষুনি চলে যাও এখান থেকে।
তোদের কারণেই মানুষ আমাদের খুব ভয়ংকর বলে জানে, ভয় পায়। আমরা কি সবাই খারাপ? তোদের মধ্যে যেমন ভালো-মন্দ মানুষ আছে, আমাদের মধ্যেও তেমন ভালো-মন্দ ভূত আছে। আর আমাদের মধ্যে ভালো ভূতের সংখ্যাই বেশি। কই, তোরা ক‘জন ভালো ভূতের কথা লিখেছিস?
তোরাই মানবসমাজে আমাদের অসভ্য আর ভয়ংকর করে তুলে ধরেছিস। তোরাই আমাদেরকে মানুষের শত্রু বানিয়ে রেখেছিস। অথচ আমরাও চাই মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে চলতে। তোদের জন্য পারি না। এতে তোদের ওপর আমরা কতটা নাখোস তা অচিরেই টের পাবি।
একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বললাম, হুঁহ্, আমরা হলাম গিয়ে লেখক। আমরাই তোদেরকে এ জগৎ সংসারে ভয়ংকর করে তুলেছি। তোদের নাম শুনলে ধনী-গরিব, শিশু-বুড়ো, রাজা-প্রজা, দুর্বল-পালোয়ান সকলেই ভয়ে অস্থির হয়ে যায়, এটা বুঝি জুত লাগছে না? বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোদের এমন দুর্বল বানিয়ে গল্প লিখে বাজারে ছেড়ে দেবো যে, যেখানে যাবি সেখানেই খাবি মাইর। মারতে মারতে তোদের ছাতু করে ফেলবে। তারপর বুঝবি লেখক কী জিনিস।
Voyanok Bhooter Golpo in Bangla (ভয়ংকর ভুতের গল্প বাংলা)
আর তুই এখন দেখ, ভূত কী জিনিস! একথা বলেই সে আমার মুখ বরাবর জোরে ফুঁ দিল। গরম ফুঁ। আমার চোখ দুটো প্রায় বন্ধ হয়ে গেল। ফুঁ দিয়ে ভূতটি বলল, তোর ঠিক পেছন দিক থেকে একটা লেজ গজাবে। তখন দুষ্টু শিশুরা তোর লেজ দেখেই ঠিক করবে, তুই গরু, গাধা না বান্দর। তখন বুঝবি ভূতের গল্প লেখার আসল মজা! কথাটা মনে রাখবি, বলেই সে লাটিমের মতো ঘুরতে ঘুরতে উধাও হয়ে গেল।
ক’দিন যাবত আমার শরীরটা মোটেও ভাল যাচ্ছে না। আমার পেছন দিকটায় টনটন ব্যথা করছে। হাত দিয়ে দেখি গোল আলুর মতো কী একটা ঠেলে উপরের দিকে উঠছে। একশ তিন ডিগ্রি জ্বর। এটা যে কিসের আলামত আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।